Wednesday, April 26, 2017

‘মানসিক যুদ্ধটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ’

Add caption
সাসেক্স-আয়ারল্যান্ড-ইংল্যান্ড। প্রস্তুতি ক্যাম্প, তিন জাতি সিরিজ ও চ্যাম্পিয়নস ট্রফি মিলিয়ে সফরটা কম করে হলেও ৪৪ দিনের। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির গ্রুপ পর্ব পেরোতে পারলে সেটি লম্বা হবে আরও। দীর্ঘ এই সফরের উদ্দেশ্যে আজ রাতেই যাত্রা করবে বাংলাদেশ দল। কাল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সফর-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে ওয়ানডে অধিনায়ক জানালেন আয়ারল্যান্ড ও ইংল্যান্ডে তাঁর দলের লক্ষে৵র কথা। আয়ারল্যান্ডে সেই লক্ষ্য ত্রিদেশীয় সিরিজ জয় পর্যন্ত বিস্তৃত। আর চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে? কঠিন গ্রুপে পড়েও অধিনায়ক আত্মবিশ্বাসী, মানসিক প্রস্তুতি ঠিক থাকলে ভালো কিছু হতে পারে সেখানেও। মাশরাফির সংবাদ সম্মেলনের চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো এখানে—
* তিন ধাপের সফর নিয়ে ভাবনা—
মাশরাফি বিন মুর্তজা: ক্যাম্পটা হবে প্রস্তুতির জন্য। আয়ারল্যান্ডে তো টুর্নামেন্ট বলতে পারেন। সেখান থেকে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির উইকেট কতটা আলাদা হবে বলা যাচ্ছে না। শুনেছি আয়ারল্যান্ডে এখনো শীত। আর ইংল্যান্ডে মাত্র গ্রীষ্ম শুরু হয়েছে। আমার মনে হয়, দুই রকম আবহাওয়ায় উইকেটের আচরণও দুই রকম হবে। তার আগে ১০-১২ দিনের ক্যাম্প আমাদের খুব কাজে লাগবে। আমরা যদি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির প্রথম ম্যাচের আগে আত্মবিশ্বাস ঠিক রাখতে পারি, তাহলে আশা করি ভালোই হবে।
* চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাংলাদেশের বাস্তব সম্ভাবনা—
মাশরাফি: সফরটা খুব কঠিন হতে যাচ্ছে। প্রতিপক্ষগুলোর দিকে তাকালে মনে হয়, চ্যাম্পিয়নস ট্রফি এত সহজ হবে না। কিন্তু বলা যায় না; আমরা ওই কন্ডিশনে ইংল্যান্ডকে দুবার হারিয়েছি। কার্ডিফে অস্ট্রেলিয়াকেও একবার হারিয়েছি। আমার এখনো মনে হয়, এটা সম্ভব। আমরা কীভাবে মানসিক প্রস্তুতি নেব, তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে। মানসিকভাবে প্রস্তুত হতে না পারলে ২০-২৫ দিনের প্রস্তুতি ক্যাম্পও তেমন একটা কাজে দেবে না।
* আয়ারল্যান্ডে তিন জাতি সিরিজে লক্ষ্য—
মাশরাফি: অবশ্যই জেতার লক্ষ্য থাকবে। জেতার জন্যই যেতে হবে। ওখানে জিততে পারলে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভালো কিছুর সুযোগ তৈরি হবে। নয়তো চাপ বেড়ে যাবে। মানসিক প্রস্তুতি ভালো না হলে সবকিছুই কঠিন হয়ে যাবে।
* প্রস্তুতি ম্যাচ নিয়ে চিন্তা—
মাশরাফি: প্রস্তুতি ম্যাচে জেতা ব্যাপার নয়। ব্যক্তিগতভাবে আমি যে জিনিসটা করতে চাই, তার প্রস্তুতি নিতে পারছি কি না, সেটা বড় ব্যাপার। ব্যর্থ হলেও প্রস্তুতি ম্যাচে কিছু আত্মবিশ্বাস পাওয়া যায়। আমি মনে করি, প্রস্তুতি ম্যাচে রান না এলে না আসবে। আমার সারা জীবন এটাই মনে হয়েছে, প্রস্তুতি ম্যাচে আমি যেন উইকেট না পাই। তবে যেটা করতে চাই, সেটা যেন হয়। আইসিসির টুর্নামেন্টে ২৫০ থেকে ৩৫০ রানের উইকেট দেওয়া হয়। এখানেও তেমন কোনো পার্থক্য থাকবে না। আমরা যদি মানসিকভাবে প্রস্তুত হতে পারি, শুরুর দিকে ভালো করতে পারি, তাহলে অনেক কিছুই হতে পারে। তবে আমরা এমন একটা গ্রুপে, যেখানে আসলেই আগে বলা সম্ভব নয় আমরা কত দূর যাব বা কী করব।
* ব্যক্তিগত ও দলীয় প্রত্যাশা—
মাশরাফি: পুরো দলেরই যে চিন্তাটা থাকা উচিত, তা হলো মানসিকভাবে দ্রুত প্রস্তুত হওয়া। আমার কাছে মনে হয় না ২০-২৫ দিনের প্রস্তুতি নিয়ে আমরা চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাব। কিন্তু আমরা যদি মানসিকভাবে প্রস্তুত হতে পারি, তাহলে অনেক দূর এগোতে পারব। এখানে মানসিক যুদ্ধটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বড় বড় দলের বিপক্ষে তাদের কন্ডিশনে খেলা—কিছুটা শীত থাকবে, গ্রীষ্মের শুরু যেহেতু—কাজটা সহজ হবে না। আমরা যদি সুস্থ থাকি এবং লড়াইয়ের মানসিক প্রস্তুতি নিতে পারি, তাহলে আশা করি ভালো খেলা হবে।
* গত কয়েকটি ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশের সফলতা কমে আসা প্রসঙ্গে—
মাশরাফি: আফগানিস্তানের সঙ্গে যে ম্যাচটা আমরা হেরেছিলাম, সেটা চিন্তার বাইরে ছিল। শেষ পর্যন্ত আফগানিস্তান সিরিজ জিতলেও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ হার কষ্টদায়ক ছিল। নিউজিল্যান্ডেও সুযোগ ছিল। আমি মনে করি, নিউজিল্যান্ড সফর থেকে আমরা নতুন একটা চ্যালেঞ্জের মধ্যে ঢুকেছি। দেশের বাইরে এখন আমাদের ভালো খেলতে হবে। ঘরের মাঠের সঙ্গে দেশের বাইরে আমাদের পারফরম্যান্স আকাশ-পাতাল ব্যবধান। অন্যান্য প্রতিষ্ঠিত দলের দিকে যদি তাকান, তারাও বেশির ভাগ অ্যাওয়ে ম্যাচই হারে। তবে আমার বিশ্বাস, আমাদের দলটা বিদেশের মাটিতে অন্য দলের চেয়ে অনেক দ্রুত সফল হবে।
* টানা সফরের ক্লান্তি প্রসঙ্গে—
মাশরাফি: এত লম্বা সফর আমরা এই প্রথম করছি না। একটা ভয় থাকে, সফরের শেষের দিকে আমরা হয়তো অবসাদে ভুগব। আগের ইতিহাস বলে, সফরের শেষের দিকে এমন হয়েছে, একটা সেশন খুব ভালো খেলেও পরের সেশনটা খুব খারাপ হয়েছে। আপনি গত বিশ্বকাপের দিকে তাকালে মনে হবে, আমরা হয়তো পুরো টুর্নামেন্ট ভালো খেলতে পেরেছিলাম। জয়ের ভেতরে ছিলাম, পয়েন্ট টেবিলে সব সময় এমন একটা অবস্থায় ছিলাম যে, আমরা ভালো জায়গায় যেতে পারি। সে জন্য হয়তো ক্লান্তির ব্যাপারটা সেভাবে আসেনি। আমার মনে হয়, শুরুর জয় ক্লান্তি অনেকটাই দূর করে দিতে পারে। আয়ারল্যান্ডে এটা হতে পারে। জয়ের ভেতরে থাকলে অনুভূতিটা খুব ভালো থাকে। দলে একসঙ্গে ১৭-১৮ জন থাকবে, তাদের একসঙ্গে থাকাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। একসঙ্গে সবার ভালো সময় যাবে না। 
* দলের মানসিক প্রস্তুতি—
মাশরাফি: কিছু জায়গায় আমাদের আরও দৃঢ় হতে হবে। ঠিকভাবে পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করতে হবে। খেলাটা ঠিকমতো বুঝতে হবে। ২৮০-২৯০ রান আমাদের ইংল্যান্ডে করতেই হবে। আবার যত ভালো বোলিংই করি, ২৮০ বা ৩০০ রানের লক্ষ্য আমাদের তাড়া করতে হবে। সেই মানসিকতা থাকতে হবে। খুব ভালো শুরুর পর নিজেকে সামলানো—এই ব্যাপারগুলো নিয়ে মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিলে কাজটা সহজ হবে।
* অধিনায়ক হিসেবে ভাবনা—
মাশরাফি: অধিনায়ক হিসেবে আলাদা করে কোনো লক্ষ্য নেই। এখান থেকে আলাদা করে চাপ নেওয়ারও কিছু নেই। তবে এটা জানি, একদিন ওয়ানডে থেকেও আমাকে অবসর নিতে হবে।
সূত্র : প্রথম আলো

No comments:

Post a Comment

বৃষ্টির আগে তামিম মাহমুদউল্লাহর ব্যাটিং

দীর্ঘ প্রস্তুতির পর কেউই আশা করেনি, শুরুটা হবে এমন! প্রতিপক্ষ যখন আয়ারল্যান্ড, ৯ রানে কেন ২ উইকেট হারাতে হবে? শেষ পর্যন্ত অবশ্য সেটা ক...