মাসও পেরোয়নি। এএফসি কাপে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে ক’দিন আগেই এ দলটির কাছে ২-০ গোলে হেরে ঢাকায় ফিরেছিল ঢাকা আবাহনী। এবার বাগে পেয়ে সেই দলটিকেই হারিয়ে দিল আকাশি-হলুদ শিবির। জয়টাও এসেছে সমান ব্যবধানে। বলতে গেলে ভারতের আই লীগের গত আসরের চ্যাম্পিয়ন বাঙ্গালোরকে হারিয়ে প্রতিশোধই নিল মামুন মিয়া বাহিনী। বুধবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফিরতি লেগের ম্যাচে সফরকারী বাঙ্গালোর এফসিকে ০-২ গোলে হারিয়েছে দশজনের ঢাকা আবাহনী। জয়ী দলের হয়ে ৮৭ মিনিটে শাহাজ উদ্দিন এবং অতিরিক্ত সময়ে গোল করেন রুবেল মিয়া।
ঘরের মাঠে দুর্দান্ত ঢাকা আবাহনী, যা দেখা যায় না অ্যাওয়ে ম্যাচে। ঘরের মাঠে এর আগে মালদ্বীপের মাজিয়া রিক্রিয়েশন ক্লাবের কাছে ২-০ গোলে হারলেও ভারতে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় ম্যাচে মোহনবাগানের কাছে ৩-১ এবং তৃতীয় ম্যাচে বাঙ্গালোরের কাছে ২-০ গোলে হেরেছিল ঢাকা আবাহনী। এএফসি কাপের অ্যাওয়ে ম্যাচে এ বাঙ্গালোরের কাছেই তারা হেরেছিল ০-২ গোলে।
তবে শেষে নয়, ম্যাচের শুরুতেও গোলের সুযোগ এসেছিল স্বাগতিকদের। কিন্তু ১২ মিনিটে নেয়া রুবেল মিয়ার শট অল্পের জন্য জড়ায়নি জালে। মিনিট পাঁচেক পর প্রতিপক্ষের একজনকে কাটিয়ে ডান প্রান্ত দিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন ফরোয়ার্ড রুবেল মিয়া। তার ক্রস নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড এমেকা ডার্লিংটন পায়ের সংযোগও ঘটান বলে। কিন্তু বল জালে না ঢুকে চলে যায় মাঠের বাইরে। হতাশার আগুনে পুড়েন দ্রাগো মামিচের শিষ্যরা। প্রথমার্ধে বাঙ্গালোরের সঙ্গে প্রায় সমানতালেই খেলেছে ঢাকা আবাহনী। ম্যাচের ৬৯ মিনিটে অফ-সাইডের ফাঁদে পড়ে একটি গোল বাতিল হয় বাঙ্গালোরের। তবে ম্যাচের ৮০ মিনিটে দশজনের দলে পরিণত হয় ঢাকা আবাহনী। ডিফেন্ডার নাসিরুদ্দিন চৌধুরী ম্যাচে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন। হতাশা জেকে ধরে স্বাগতিকদের। তবে নাসিরকে হারানোর প্রতিজ্ঞা বাড়ে ঢাকা আবাহনীর। আর ৮৭ মিনিটের গোলে বদলে যায় ম্যাচের গল্পটাও। ডানপ্রান্ত থেকে জনাথন ডেভিডের ক্রস বুঝে নিয়ে দুর্দান্ত শটে বঙ্গালোরের জাল কাঁপান তরুণ উদীয়মান (বদলি) ফুটবলার সাদ উদ্দীন (১-০)। উল্লাসে মেতে ওঠে স্বাগতিক শিবির। তবে গোল হজম করে অনেকটাই মনোবলও হারিয়ে ফেলে সফরকারীরা। অন্যদিকে
গোল পেয়ে যেন আরও উজ্জীবিত
হয়ে ওঠে মামুন বাহিনী। পরের মিনিটে আরও একটি সুযোগ সৃষ্টি করেন জনাথন। ডান প্রান্ত দিয়ে তার নেয়া দারুণ শট বাঁ পোস্ট ঘেঁষে অল্পের জন্য চলে যায় মাঠের বাইরে। ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ে নিজের পোস্ট ছেড়ে প্রায় মাঝ মাঠে চলে আসেন বাঙ্গালোরের গোলকিপার। সুযোগটা হাতছাড়া করেনি আকাশি-হলুদরা। বল নিয়ে এগিয়ে গিয়ে প্রায় মাঝ মাঠ থেকে ফাঁকা পোস্টে বল জড়িয়ে দেন ফরোয়ার্ড রুবেল মিয়া (২-০)। আরও একবার উল্লাসে ফেটে পড়েন খেলোয়াড় ও সমর্থকরা। আর কোনো দল গোলের দেখা না পাওয়ায়
২-০ ব্যবধানে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে ঢাকা আবাহনী।
ম্যাচে হাসি মুখেই সংবাদ সম্মেলনে প্রবেশ করেন সাদ উদ্দিন। এসেই বলেন, ‘গোল করতে পারলে আমার আত্মবিশ্বাস বাড়ে। এ ম্যাচে সেটাই ফিরে পেয়েছি। আশা করি, সামনের ম্যাচেও আমি দলকে আরও গোল উপহার দিতে পারব।’ দলের ক্রোয়েশিয়ান কোচ দ্রাগো মামিচের কথা, ‘ছেলেদের খেলায় আমি খুশি। ওরা আমাকে জয় উপহার দিয়েছে। আশা করি, এ ধারাবাহিকতা ভবিষ্যতেও বজায় রাখবে।’ অন্যদিকে হতাশ বাঙ্গালোরের স্প্যানিশ কোচ আলবার্তো রোকা পিউল। তার কথায়, ‘আমি খুবই হতাশ হয়েছি। তিনটি ম্যাচ জেতার পর হার মানতে হল। তবে প্রথমার্ধে দু’তিনটি গোলের সুযোগ নষ্ট না হলে ম্যাচটি আমরাই জিততাম। তবে এখন এটা সত্যি যে, আমরাই হেরেছি। আশা করি, পরের ম্যাচে ছেলেরা ঘুরে দাঁড়াবে।’
সূত্র: যুগান্তর।

No comments:
Post a Comment